নিজস্ব প্রতিবেদক
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরেমুখো মানুষের উপচেপড়া ঢল নেমেছে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। সোমবার লক্ষাধিক যাত্রী নাড়ির টানে ট্রেনযোগে বাড়ি ফিরবেন। আর ঘরে ফেরা এসব মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে অতিরিক্ত বগিসহ ৫৯টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।
অন্যদিকে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে দক্ষিণাঞ্চলমুখী মানুষের ভিড় লেগেছে সদরঘাটে। ভোর থেকে যাত্রীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। এদিন সকাল সাড়ে ৫টার দিকে টার্মিনাল ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনের প্রথম যাত্রা শুরু হয় বলাকা এক্সপ্রেসের মাধ্যমে। ট্রেনের ঈদ স্পেশাল সার্ভিসও আছে এদিন।
স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে মোট ৫৯টি ট্রেন ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে ৩১টি আন্তঃনগর, পাঁচটি ঈদ স্পেশাল, আর বাকিগুলো লোকাল ও মেইল সার্ভিস। যাত্রার দিন স্টেশন থেকে লোকাল ও মেইল সার্ভিসের টিকিট দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে যাত্রীদের অনুরোধে দেওয়া হচ্ছে স্ট্যান্ডিং টিকিটও।
এদিকে বিনা টিকিটে কমলাপুর স্টেশনের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। স্টেশনের মূল ফটকে টিকিট দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। টিকিটবিহীন সবাইকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
স্টেশনে রয়েছেন র্যাব, পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ আনসার সদস্যরা। যাত্রীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন রোভার স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, সোমবার ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনসহ মোট ৬৮টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে পাঁচটি স্পেশাল ঈদ সার্ভিস ট্রেন। ঈদ স্পেশালের মধ্যে সোমবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে ‘খুলনা ঈদ স্পেশাল’। বাকি ট্রেনগুলো লোকাল ও মেইল সার্ভিস। প্রতিদিন ট্রেনযোগে এক লাখ মানুষ ঘরে ফিরবেন।
কোনো যাত্রীকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেনের ছাদে বা বগির বাফারে না ওঠারও অনুরোধ জানান স্টেশন ম্যানেজার।
এদিকে ঘরে ফেরার তাড়নায় ভোর থেকেই সদরঘাটে এসে পৌঁছাতে থাকেন যাত্রীরা।
আরিফুল ইসলাম নামে চাঁদপুরগামী এক যাত্রী বলেন, দিনের যানজট এড়াতে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মিরপুর থেকে রওনা দেই। রাস্তা ফাঁকা থাকায় সোয়া ৪টায় টার্মিনালে এসে পৌঁছে যাই। দুপুরের পর থেকে যাত্রী চাপ অনেক বেশি হতে পারে, তাই আগেই চলে আসা।
সোনার তরী লঞ্চের স্টাফ রাকিব বলেন, এখন যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকবে। দুপুরের পর থেকে পুরোদমে যাত্রীরা আসতে শুরু করবেন।
এদিকে ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীদের এই চাপ যেন উপচে না পড়ে অর্থাৎ যেন কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে বরং ঘরে ফেরার এই যাত্রা যেন সুখকর হয়। এমনই চাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।