প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে নিয়ে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভয়ানক একটি তথ্য জানতে পেরেছেন। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ চলে যাওয়ার পরও ভাইরাসটি চোখে থেকে যেতে পারে।
ইতালির গবেষকরা জানান, এমন একজন করোনা রোগী পাওয়া গেছে যার নাক থেকে ভাইরাসটি চলে যাওয়ার পরও চোখে সংক্রামক কণা বিদ্যমান ছিল। চোখে করোনাভাইরাস দীর্ঘদিন থাকতে পারে বলে ওই গবেষণায় সতর্ক করেছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ৬৫ বছর বয়সি এক নারী জানুয়ারিতে উহান থেকে ইতালি এসেছিলেন এবং পাঁচ দিন পর তার শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দেয়। একদিন পর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হোন এবং পরীক্ষার রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসে। হাসপাতালে তৃতীয় দিনে চিকিৎসকরা তার চোখ থেকে নমুনা নেন এবং আবিষ্কার করেন, তার চোখে করোনাভাইরাসের জিনগত উপাদান রয়েছে।
চিকিত্সকরা প্রতিদিন তার চোখ থেকে নমুনা সংগ্রহ অব্যাহত রাখেন এবং দীর্ঘ ২১ দিন পর্যন্ত ভাইরাসটির উপস্থিতি দেখতে পান।
তারপরের কিছুদিন চোখ ও নাকের নমুনায় ভাইরাসটির উপস্থিতি দেখা যায়নি।
কিন্তু ২৭তম দিনে আবারও কেবল চোখের নমুনার মধ্যে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। উদ্বেগজনক ব্যাপার হলো, চোখের নমুনা গবেষণাগারে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ভাইরাসটি তখনো সংক্রামক ছিল।
অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিনে প্রকাশিত এই কেস স্টাডিতে ডা. ফ্রান্সেসকা কোলাভিটার নেতৃত্বে গবেষকরা লিখেছেন: ‘নাকের নমুনায় সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের আরএনএ শনাক্ত না হওয়ার কিছুদিন পর তা চোখের নমুনায় পাওয়া গিয়েছিল। আমরা দেখেছি, সার্স-কোভ-২ সংক্রামিত রোগীদের চোখের তরলে সংক্রামক ভাইরাস থেকে যেতে পারে। তাই এটি সংক্রমণের সম্ভাব্য উত্স হতে পারে।’
গবেষকদের মতে, এই গবেষণা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন নাক, মুখ এবং চোখের স্পর্শ এড়ানো এবং ঘন ঘন হাত ধোয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
কেস স্টাডিতে গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, করোনভাইরাসযুক্ত প্রায় ১ থেকে ৩ শতাংশ রোগীর চোখ লাল হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। সংক্রামিত ব্যক্তির চোখের তরল স্পর্শ করে বা তরল বহনকারী বস্তুগুলো থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।