আর্ন্তজাতিক ডেস্ক :
ভারতের রাজধানী দিল্লির সাতটি মসজিদ থেকে আজানের শব্দদূষণ হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। এক কট্টরপন্থি সংগঠন অখণ্ড মোর্চার অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত ওই নির্দেশ দেয় বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
অখণ্ড মোর্চার অভিযোগ; পরিবেশ রক্ষা আইন ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি ভেঙে ওই মসজিদগুলি আজানের সময়ে লাউডস্পিকার বাজাচ্ছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পর চেয়ারপার্সন বিচারপতি আদর্শকুমার গয়ালের নেতৃত্বাধীন পরিবেশ আদালতের বেঞ্চ কেন্দ্রীয় ও দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদকে শব্দদূষণ যাচাইয়ের নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট ডেসিবেলের মধ্যে যাতে লাউডস্পিকার বাজানো হয়, তা দেখার দায়িত্ব দিল্লি পুলিশের।
আদালতের এই নির্দেশ পেয়ে উল্লসিত মোর্চার সভাপতি সন্দীপ আহুজা। তিনি বলেন, ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদ যা করার করবে। তার সঙ্গে আমরাও পরীক্ষা করতে নামব। সোজা ১০০ নম্বরে ফোন করে আজানের আওয়াজ শুনিয়ে দেব।’
ভারতীয় পরিবেশ বিধি অনুযায়ী, হাসপাতাল-স্কুলের মতো ‘সাইলেন্স জোনে’ লাউডস্পিকারের নির্ধারিত মাত্রা দিনের বেলায় ৫০ ডেসিবেল এবং রাতে ৪০ ডেসিবেল। আবাসিক এলাকায় এই মাত্র যথাক্রমে ৫৫ ডেসিবেল ও ৪৫ ডেসিবেল।
অখণ্ড মোর্চার আইনজীবী রাহুলরাজ মালিক আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগে আরো বলেন, অনেক মসজিদের কাছে স্কুল-হাসপাতালও রয়েছে।
কটৃরপন্থি এই দলটি শুরু থেকেই মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। গত চার মাস আগে তারা হনুমান জয়ন্তী পালন করার সময় মোটরবাইক মিছিল করেছিল দলটি। তখন দিল্লিতে মসজিদের সামনে গিয়ে অস্ত্রশস্ত্র হাতে স্লোগান দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল তারা। এই অভিযোগে এই সংগঠনের বিরুদ্ধে এখনও পুলিশের তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ বৈকুণ্ঠলাল শর্মা অখণ্ড ভারত মোর্চা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান সভাপতি সন্দীপ আহুজা আরএসএস, বজরং দল, যুব মোর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রতি বছরই হনুমান জয়ন্তীতে ‘বজরং সশক্ত র্যালি’ বার করে মোর্চা। দিনে দিনে তাদের মিছিলের দৈর্ঘ্য বেড়েই চলেছে।
দলের সভাপতি সন্দীপ বরাবরই মুসলিম বিদ্বেষী বলে পরিচিত। তিনি মসজিদে আজান বন্ধের চেষ্টা করছেন দীর্ঘদিন ধরেই। তার দাবি, ‘হিন্দুদের অনুষ্ঠানেও স্পিকার বাজে। অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু ওরা (মুসলিম সম্প্রদায়) অনুমতি ছাড়াই দিনে পাঁচ বার লাউডস্পিকার বাজায়। আইন সকলের জন্যই এক হওয়া উচিত। এই জন্যই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির দাবি তুলছি।’