জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
কোন জায়গায় রয়েছে ৫ ফুট। কোন জায়গায় রয়েছে ৭ফুট। আথচ কাগজে কলমে রয়েছে ২৬ফুট রাস্তা। বসতবাড়ী তুলে এভাবেই দখল করে নেয়া হয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা-পাখিমারা মহাসড়ক থেকে নবীপুর পর্যন্ত সড়কের প্রায় ২৫০মিটার রাস্তা। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিরোধের কারনে কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় রাস্তার যতটুকু রয়েছে, কোন কোন জায়গায় তাও মিশে গেছে সমতল ভূমির সাথে। প্রায় ষাট বছরের পুরনো রাস্তা এভাবে দখলের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে তিনটি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ। এনিয়ে বিরোধ বর্তমানে চরম আকার ধারন করেছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
সংস্কার কাজ বন্ধ ॥ ভোগান্তী তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ॥
সরজমিনে দেখা যায়, কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে নবীপুর পর্যন্ত ৭কি.মি. সড়কের ২৫০ মিটার পর্যন্ত দু’পাশ বসত বাড়ী তুলে দখল করে নেয়া হয়েছে। এতে করে নকশানুযায়ী ২৬ফুট রাস্তা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে তার অস্তিত্ব রয়েছে ৫-৭ফুট। রাস্তার মাটি কেটে নেয়ার ফলে কোথাও কোথাও তা সমতল ভূমির সাথে মিষে গেছে। আবার দখলকৃত রাস্তার পাশে দিয়ে মানুষ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে কাটা ফেলে রাখা হয়েছে।
ভূক্তভোগী স্থানীয়রা জানায়, ইউসুফ শিকদার, কুদ্দুস শিকদার, কাশেম শিকদার, বারেক শিকদার বাড়ীঘর তুলে এভাবেই রাস্তা দখল করে নিয়েছে। ফলে এ সড়কে চলাচলকারী নীলগজ্ঞ ইউনিয়নের নবীপুর, ঘুটাবাছা, চাঁদপাড়া গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তীতে। স্থানীয় বারেক জানান, এদের দখলের কারনে ২৫০মিটার রাস্তার বর্তমানে কোন অসিত্ব নেই। অতিবৃস্টির কারনে বিলে পানি জমে রাস্তা তলিয়ে যায়। কার্দমাক্ত হয়ে গিয়ে হাটু পর্যন্ত গেড়ে যায়।
শহীদুল ইসলাম জানান, পাখিমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নাওভাংগা প্রাথমিক ও টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। কাদামাটিতে তাদের পরিচ্ছেদসহ বইপত্র নস্ট হয়ে যায়। রোগীদের নিদারুন কস্ট ভোগ করতে হচ্ছে। আ. মান্নান জানান, গুরুত্বপূর্ন এ রাস্তা দিয়ে তিনটি গ্রামের মানুষের চলাচল। কুদ্দুস শিকাদের ছেলে ইউসুফ শিকদার জানান, তাদের দখলে যদি রাস্তার জমি থাকে তবে অবশ্যই ছেড়ে দিবেন এবং এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
নীলগজ্ঞ ইউপি সদস্য আ. রব হাওলাদার বলেন, দুটি গ্রুপে বিভক্ত শিকদারদের একটি অংশ রাস্তা পূর্বদিকে এবং অপর গ্রুপ পশ্চিম দিকে দিতে চায়। তাদের এমন বিরোধে নক্সা ধরে সার্ভেরের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমলের এ রাস্তার সীমান র্নিধারন করা হয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ এর বিরোধীতা করে উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
নীলগজ্ঞ ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, রাস্তার কারনে শিক্ষার্থীসহ নারী ও বয়স্ক মানুষের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষটি সমাধানের জন্য একাধিকবার বসা হয়েছে। রাস্তা নির্ধার করে সীমানা পিলার দেয়া হয়েছে। তখন উভয় পক্ষ মেনে নিলেও বর্তমানে একটি পক্ষ তা মানছেনা। সমাধানের করে অচিরেই রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।